হে প্রিয় বোন!
যতদূর জানি, তিনি সন্তানসম্ভবা হয়েছিলেন, এমন কোনো তথ্যও হাদীসে নেই। নবীজির ঘরে খাদীজা রা.-এর ছয়টা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিল। চার কন্যা, দুই ছেলে। এটা দেখে আয়েশা রা.-এর মনেও আশা জাগা বিচিত্র কিছু ছিল না, আমারও সন্তান হোক!
.
কিন্তু তিনি সন্তানের জন্যে দু‘আ করেছেন বা নবীজির কাছে দু‘আ চেয়েছেন এমন কোনও নজীর হাদীসে নেই বলেই জানি। অথচ তিনি ছিলেন নবীজির প্রিয়তম স্ত্রী। সন্তান চাওয়া অন্যায় কোনও কিছু নয়। নবীজিকে বললেই হত। তিনি আল্লাহর কাছে দু‘আ করতেন। আয়েশা রা. এমনটা করেন নি।
.
নবীজি যখন ইন্তেকাল করেন, তখন আয়েশা রা.-এর বয়স আঠার। তিনি ইন্তেকাল করেছেন ৫৮ হিজরীতে। তার মানে নবীজির পরও তিনি প্রায় ৪৭ বছর বেঁচে ছিলেন। এই দীর্ঘ সময় তিনি স্বামী সন্তান ও সংসার ছাড়াই কাটিয়ে দিয়েছেন।
.
কখনো সন্তান বা সংসারের জন্যে আক্ষেপ করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই। তিনি ইলমচর্চা, ইবাদত-বন্দেগী, শিক্ষকতা-ফতোয়াপ্রদান করেই পুরো সময়টা কাটিয়ে দিয়েছেন। বড় বড় সাহাবী তার কাছ থেকে পাঠ নিয়েছেন। মদীনার সমস্ত মহিলাকুলের শিক্ষিকা ছিলেন।
সন্তান না হলে একটা মেয়ের জীবন থেমে থাকে না। স্বামী মারা গেলে একটা মেয়ের জীবন চূড়ান্ত থমকে যায় না। মা-বাবা মারা গেলে একটা মেয়ের জীবন স্থবির হয়ে পড়ে না। সংসার না হলেই একটা মেয়ের জীবন অর্থহীন হয়ে যায় না।
.
আল্লাহ তা‘আলা যা ছিনিয়ে নেন, তার চেয়ে উত্তম কিছু বান্দাকে দান করেন। দুনিয়া পরীক্ষার স্থান। কেউই এখানে পরীক্ষা দেয়া ছাড়া থাকতে পারে না।
.
আয়েশা রা. বিষয়টা ভালভাবে জানতেন এবং কর্মের মাধ্যমে তা মেনে দেখিয়েও গেছেন। জীবনকে তিনি জনকল্যাণে ব্যয় করে গেছেন। আল্লাহর ফয়সালার প্রতি সন্তুষ্ট থেকেছেন। সবর-শোকরের সাথে জীবন কাটিয়ে গেছেন। কুরআন কারীমকে সাথী বানিয়েছেন, হাদীসচর্চাকে জীবনের অনুষঙ্গ বানিয়েছেন!
.
আম্মাজান আয়েশা, খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) যেনো আমাদের আদর্শ হয়। কোন নায়ক,নায়িকা,গায়ক, গায়িকা মডেল-অভিনেত্রী যেন আমাদের আদর্শ না হয়…
আর যখনই আশাহত হবেন তখনই এই আয়াতটা মনে করবেন –
وَّ یَرۡزُقۡہُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ فَہُوَ حَسۡبُہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بَالِغُ اَمۡرِہٖ ؕ قَدۡ جَعَلَ اللّٰہُ لِکُلِّ شَیۡءٍ قَدۡرًا
Leave a Reply