1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
“এ খালেক ফাউন্ডেশন” দেশ ও মানুষের কল্যাণে যথাসাধ্য প্রচেষ্টায়…………… মৃন্ময়ীর খোঁজে – – – – নাহিদ সোলতানা নিপা ভালোবাসার বাঁধন – – – – জি জে আফরোজ # প্রিয়_মানুষ(সংক্ষিপ্ত) # নওশিন_তাওছিয়া_তাবাচ্ছুম(লেখনীতে) # বিদর্ভ_নগরী – – – – পাখি রায় প্রভাতী – – – সাফিনা আক্তার # ব্ল্যাকমেইল (সব পর্ব একসাথে) – – – লেখা: আফরিন শোভা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার ————- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ———————– প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দেওয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন —–

আব্রাহার হস্তি বাহিনী যেখানে ধ্বংস হলো ———————————নাসির উদ্দিন আহমদ

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪
  • ১৪২ বার
হজের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পরে মিনা মুজদালিফা ও আরাফাত ময়দান সারাটি বছর সুনসান নীরবতা বিরাজ করে।
গত বিকেলে গিয়েছিলাম এ সমস্ত স্থান পরিদর্শনে। জামারাতে একটা কাক পক্ষিও আজ নেই। দুদিন আগেও এখানে হাঁটা যেত না মানুষের ভিড়ে। এখন সেখানেই খাঁ খাঁ শূন্যতা। আমরা ঢুকেছি আজিজিয়া হয়ে। এই এলাকায় হজের সময় কোন গাড়ি ঢুকেনি। গাড়ি প্রবেশের কোনো সুযোগও অবশ্য তখন ছিলো না। এত মানুষের ভিড়ে গাড়ি ঢুকলে আরো বেশি জটলা পেকে যেত।
কিছু পরিচ্ছন্নতা কর্মী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত আছে। ভাবতেই অবাক লাগে এই পথেই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য হাজীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কত সংখ্যক মানুষের মৃত্যু? আমারও অজানা। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমগুলো এবং মানুষের প্রত্যক্ষ বর্ণনা শুনে মনে হয় সংখ্যা হাজার হতেও পারে। বলা যায় ব্যাপক মৃত্যু, ব্যাপক এক বিপর্যয়! কেন এত ব্যাপক মৃত্যু কথা প্রসঙ্গে বলা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আব্রাহার হস্তি বাহিনী যেখানে ধ্বংস হয়েছিল মুজদালিফা এবং আরাফাতের মাঝের সীমানায় সেখানে এসে দাঁড়ালাম। চতুর্থ রিং রোডের সন্নিকটে এই জায়গাটির নাম ওয়াদি মুহাসসার। এর দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার।
আব্রাহা এসেছিল বিশাল হস্তী বাহিনী নিয়ে কাবা শরীফ ধ্বংস করতে। সে ছিলো ইয়েমেনের খৃষ্টান নৃপতি। মুলত আবিসিনিয়া রাজত্বের অধীনে থাকলেও সে একসময় হয়ে ওঠে ইয়েমেনের স্বাধীন গভর্নর।
সে একটি বিশাল গীর্জা তৈরী করেছিলো। ইতিহাসে এটাকে আল কালীস, আল কুলীস বা কুল্লাইস নামে অভিহিত করে।
সাদা, কালো, হলুদ, সবুজ পাথরের কারুকার্যময় এই গীর্জা ছিলো চমৎকার নান্দনিক নির্মাণ কৌশলের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তার মনোবাসনা ছিলো এতদঞ্চলের সমস্ত মানুষ এখানে আসবে। বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। কিন্তু তার এ আশা ভঙ্গ হচ্ছিলো কাবা ঘরের কারণে। কারণ দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ কাবা শরীফেই আসে। প্রার্থনা করে। বাণিজ্যের পসার জমে মক্কায়। সে ঘোষণা দেয় আরবদের হজকে মক্কার কাবার পরিবর্তে সানার দিকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হবে না। সেজন্য সে বিদ্বেষ এবং হিংসা বশবর্তী হয়ে কাবা ধ্বংস করার জন্য মনস্থির করে।
কাবা শরীফের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তখন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দাদা আব্দুল মুত্তালিব। আব্রাহার বাহিনী তার দুইশত উট ধরে নিয়ে গেছে। আব্দুল মোত্তালিব আব্রাহার কাছে এলেন। তাঁর উট ফেরত চাইলেন। সে বলল তুমি তো কাবা ঘরের মুতাওয়াল্লী। তুমি কাবাঘর রক্ষার জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করবে তা না করে তুমি তোমার উটের জন্য এসেছ। এটা বড়ই হাস্যকর।
তিনি বললেন আমি আমার উটের মালিক সুতরাং আমি তোমার কাছে উটের জন্য এসেছি। কাবা ঘরের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ তিনি তাকে রক্ষা করবেন। কাবা ঘর রক্ষা করার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহর আমার নয়।
তিনি তাঁর দুইশত ফেরত নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন।
আব্রাহা কাবা ঘর ধ্বংসের জন্য এগোতে থাকলো। তার বাহিনী ৬০ হাজার পদাতিক আর হস্তি ১৩। তার বিশেষ হাতির নাম ছিলো মাহমুদ। এটি তখন মক্কার দিকে মুখ করতেই বসে পড়ে। কুড়ালের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়। কিছুতেই হাতি উঠে না। অন্যদিকে মুখ করলেই সে হুড়মুড় করে চলতে থাকে। কিন্তু কাবার দিকে মুখ করলে সে আর চলে না। হঠাৎ তখন আকাশ ঘন মেঘে ছেয়ে যায়। আসলে তা মেঘ ছিলো না ছিল পাখির ঝাঁক। আবাবিল মানে বহু ও বিভিন্ন দল যারা একের পর এক বিভিন্ন দিক থেকে আসে। এটা ছিলো আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃশ্যমান এয়ার অ্যাটাক, ড্রোন আক্রমণ। যা একবিংশ শতাব্দীতে মানুষ দেখছে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আল্লাহর পক্ষ থেকে সেই ড্রোন অ্যাটাক হয়েছিল। সাগরের পাড় থেকে উড়ে আসা পাখির দুই পায়ে এবং ঠোঁটে কঙ্কর। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসে নিক্ষেপ করতে থাকলো কঙ্কর আব্রাহার হস্তীবাহিনীর উপর। তবে এই পাখিগুলো নজদ, হেজায, তেহামা কিংবা লোহিত সাগরের উপকূলবর্তী এলাকার পাখি ছিল না। এই ধরনের পাখি আগে কখনো দেখা যায়নি পরেও দেখা যায়নি। তাদের ঠোঁট ছিল পাখির মতো আর পাঞ্জা ছিল কুকুরের মতো। এই কঙ্করগুলো ছিল ছোট মটর দানার সমান। লাল কালচে ছিলো এগুলোর বর্ণ। মক্কার অনেক লোকের কাছে এই গজবের পাথর সংরক্ষিত ছিল দীর্ঘদিন পর্যন্ত। এই কঙ্কর গুলো মাংস ভেদ করে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিলো হস্তি ও মানুষ। আব্রাহার সৈন্যবাহিনী এবং সমস্ত হস্তি বাহিনী মাঠের সাথে মিশে গেল যেমন ভাবে খড় কূটো মাটির সাথে মিশে যায়। আব্রাহা অবশ্য পলায়ন করেছিল। পাথরের আঘাতে তার মাংসগুলো তখন ছিন্ন বিচ্ছিন্ন। সে তার নিজের সানা শহরে গিয়ে ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। আল্লাহ তাঁর ঘরকে এভাবেই রক্ষা করেছিলেন আকাশ থেকে বাহিনী পাঠিয়ে। কোন কোন ঐতিহাসিকের বর্ণনা মতে ঘটনাটি ঘটে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে যে বছরে নবীর জন্ম হয়।
সেই অভিশপ্ত স্থানে দাঁড়িয়ে আছি। এটি আল্লাহর গজব প্রাপ্য স্থান। আল্লাহর গজব প্রাপ্ত স্থানে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক নয়। দ্রুত প্রস্থান করেছেন নবী সাঃ, হযরত উমর রাঃ। আল্লাহর আরেকটি গজব প্রাপ্ত স্থান মাদায়েন সালেহ দর্শনের সৌভাগ্য হয়েছিল। এই অভিশপ্ত এলাকা থেকে আমরা অতি দ্রুত প্রস্থান করলাম।
….
২১.৬.২৪/ মক্কা।
May be an image of 1 person

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..